(১ম পর্ব) একজন Backend Developer এর Coffee বিজনেস শুরু করার গল্প

Saturday, Sep 27, 2025 | 3 minute read | Updated at Sunday, Oct 26, 2025

Walid Ashik
(১ম পর্ব) একজন Backend Developer এর Coffee বিজনেস শুরু করার গল্প
Backend developer at droidcon

আজকে একজন Backend Developer এর Coffee বিজনেস শুরু করার গল্প সেয়ার করবো।

CoffeeKahf ফাউন্ডার Md Mohiuddin ভাই আমার দীর্ঘদিনের পরিচিত। ভাইয়ের সাথে অনেক আগে আমি একটা প্রজেক্টে কাজ করেছিলাম।

ঐ প্রজেক্টের ব্যাকএন্ড টা করেছিলেন উনি, আর আমি করেছিলাম ফ্রন্টএন্ড এর কাজ।

সেই কাজ শেষ হওয়ার দীর্ঘদিন পর একদিন হঠ্যাত ভাইয়ের কল। তারপর ভাইয়ের সাথে একদিন হার্ফিতে দেখা। দীর্ঘ কয়েক বছর পর সেদিন উনার সাথে আমার প্রথম দেখা এবং যা বুঝতে পারলাম যে ভাই একজন তুখোড় ব্যাকএন্ড ডেভলপার।

যাইহোক, কথার এক ফাকে জানতে পারলাম কফিতে উনি পি এইচ ডি মত করে ফেলেছেন। উনার মত কফি ফ্রিক আমি এর আগে কখনো কাউকে দেখি নাই।

এস্প্রেসো, এরোস্পেস, ভি ৬০, মকা পট, ফিল্টার পেপার, ফ্রেন্স প্রেস কফি। মানে কফির এ ট্যু যেড উনি জানেন। আমিও দীর্ঘদিন যাবৎ কফির পিছনে বহু টাকা পয়ষা উড়িয়ে এসব কিছুর টুকিটাকি জিনিস সম্পর্কে ধারণা অর্জন করেছি।

তারপর, ভাইয়ের মত একজন মানুষের সাথে দেখা করার এবং প্রতিনিয়ত কথা বার্তা হবার ব্যাপারটা আমার জন্যে বেশ আনন্দের ছিল।

ভাইয়ের সাথে আড্ডা দিতে দিতে একদিন জানলাম, উনি কফি নিয়ে কিছু একটা শুরু করবেন ভাবছেন।

জানলাম, উনি কফির বিজনেস শুরু করতে যাচ্ছেন। অবশ্য শুরুতে উনি বিজনেস করবেন বলে কিছু ঠিক করেছিলেন না। উনি জাস্ট কফি ব্লগ করবেন ভেবেছিলেন।

কিন্তু, উনার শুভাকাঙ্ক্ষী এক ভাইয়ের পরামর্শে উনি দেখলেন, কফি নিয়ে যখন ব্লগই লিখবেন তখন এর পাশাপাশি একটা বিজনেস দাড় করাতে পারলে ব্যপারটা আরেকটু সাস্টেইনেবল হবে।

এজ ইউজাল সবার মত উনি কিনে ফেললেন একটা ডোমেইন। করে ফেললেন ওয়েবসাইট ডিজাইন। কিন্তু তখনো প্রডাক্ট হাতে এসে পৌছায় নি।

উনি বেশ ঘুরাঘুরি করলেন ঢাকার বিভিন্ন মার্কেটে মার্কেটে এবং কিছু রিভার্স ইঞ্জিনিয়ারিং এর জ্ঞ্যান কাজে লাগিয়ে ইন্টারন্যাশনাল কফি এক্সেসরিজ এবং কফি(বিন ও গ্রাউন্ড কফি) ইম্পোর্টের একটা লাইন-ঘাট বের করে ফেললেন।

অর্ডার করলেন বেশ কিছু LavAzza গ্রাউন্ড কফি, মকা পট, ফ্রেন্স প্রেস, ট্রাভেল ফ্রেন্ডলি ফিল্টার পেপার + পোউর-ওভার সেটাপ।

কিন্তু উনি আর সেভাবে কফি বিজনেসটা লন্স করতে পারলেন না। টিপিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারদের প্রোডাক্ট লন্সের জার্নি যেমন হয়। প্রডাক্ট লন্স করতে কিছু ডকুমেন্টস এবং আনাড়ি কিছু নট-এঞ্জয়েবল কাজ থাকে যেগুলো অনেক ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাড়ায়। যেসব কাজ ইঞ্জিয়ারদের জন্যে কঠিন।

আমাদের মজা লাগে কোড করতে। কম্পিউটার নিয়ে খেলতে। বিজনেস দাড় করানো খুব একটা কোডিং এর পাজল সলভ করার মত এঞ্জয় করার জিনিস না। একটাই কারন, বিজনেসে কোন ইন্সট্যান্ট রেজাল্ট নাই।

বিজনেসে যাই করেন না কেনো, সময় লাগে অনেক। মার্কেটিং করবেন, এক্সাট কোন ফর্মুলা, লিন্ট ওয়ার্নিং বা ডকুমেন্টসন নাই যেটা দেখে দেখে করবেন। তারপর, ধরেন মার্কেটিং এর কিছু করলেনও কিন্তু এর আউটপুট কন্সোলে দেখা যায় না। টেস্ট কোড দিয়ে আইডিয়া ভ্যালিডেটও করা যায় না।

এজন্যে এবং নানাবিধ কারনে ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যাকগ্রাউন্ডের লোকেদের বিজনেস করাটা অনেকখানি কঠিন। একারনে আমরা অনেক কিছু শুরু করেও শেষ করতে পারি না।

মহিউদ্দিন ভাইয়ের ক্ষেত্রেও তেমনই একটা ফেজ যাচ্ছিলো। আমি বিষয়টা অনুধাবন করার পর বুঝলাম, উনি উপরের বর্ণনাকৃত কারন এবং পারফেকশনের ব্যাড়াজালে আটকে গেছেন।

বুঝতে পারলাম, উনার এখন একটু প্রয়োজন কিছু জিনিশ অভারলুক করার। উনি কফি কাহফের ওয়েবসাইট টা কোড করতেছিলেন কিন্তু কোনভাবেই তা শেষ করতে পারছিলেন না।

উনি আমাকে প্রায়ই বলতেন, “ভাই আর কিছু বাগ আছে, সব গুলা শেষ করেই লন্সিংয়ে যাবো”

এভাবে কয়েক সপ্তাহ যাউয়ার পর সেইম ঘটনার পুনরাবৃত্তি। পরে উনাকে বললাম, “যাই ই হোক, যাই ই থাক না কেনো, আপনি লন্স করেন। দুই একটা বাগ সলভ না করলে তেমন কিছু যায় আসে না। সব প্রোডাক্টেই বাগ থাকে। ডেভলপার মাইন্ডসেট থেকে বের হয়ে বিজনেস মাইন্ডসেটে আসেন ভাই।”

উনাকে আরো বললাম, “এয়ার বি এন বি তিনবার লন্স করছে। দরকার হলে আপনিও তিন বার লন্স করবেন। সব বাদ দিয়ে আগে লন্স করেন।”

ব্যাপারটা দেখলাম কনভেন্সিং ছিল। উনি কিছু এক্সেস্টিং বাগ উপেক্ষা করেই লন্স করলেন coffeekahf.com

উনার জন্যে ব্যাপারটা খুবই রোমাঞ্চকর। এতদিনের এত রাত জাগা, এত সোর্স খুজে বের করে প্রোডাক্ট ইম্পোর্ট করা। এত দিনের এত-এত প্রিপারেশন শেষে উনি ফাইনালি লন্স করলেন।

এবং, আলহামদুলিল্লাহ এই লন্স টা ছিল একটি সাকসেস। এরপরের Coffee Kahf এর জার্নিটা ছিল আরো বেশি থ্রিলিং। কফি কাহফের সাথে আমার জয়েনিং ও আমি কো-ফাউন্ডার হিসেবে অনবোর্ড হওয়ার পর বিজনেস করতে যেয়ে যেসব জিনিশ গুলো শিখেছি সেই গল্প আগামী কোন একদিন লিখবো ইনশাল্লাহ।

কফি বিজনেস সমাচার (পর্ব ১/৪)

© 2025 Walid Ashik

🌱 Powered by Hugo with theme Dream.

About Me

আসসালামু-আলাইকুম!

বেশ কিছুদিন আগেও আমি কখনো ভাবিনী যে এরকম একটা সাইট খুলে লেখালেখি শুরু করবো। একদিন সকালে daily.dev এর একজন বিদেশী লেখকের একটা কোডিং ব্লগ পড়ে মনে হলো যে, আমিও একটা ব্লগিং সাইট বানিয়ে লেখালখিটা আবার শুরু করি। “আবার” শব্দটা ব্যবহার করলাম এইজন্যে যে, এর আগেও আমি বেশ কিছুদিন Medium এ লেখালেখি করেছি।

একসময় ভাবতাম লেখালখি করে কি আর পেট চলে! সেই ধারণা টা medium এ কিছু আর্টিকেল পাবলিশ করার পর চেঞ্জ হয়ে গেছে। শ-তিনেক ডলারও উপার্জন করেছিলাম। তারপর যে কি হলো, আর লেখালেখির জন্যে কখনো কলম বা কি-বোর্ড নিয়ে বসা হয় নি।

সেই হারিয়ে যাওয়া অভিপ্রায় হঠাৎ মনে উকি দিলে এই সাইট টা বানাইলাম এক-রাতে। এবার অবশ্য উদ্দেশ্য একটু ভিন্ন। টুকটাক লেখালেখি করে মনের খোরাক মেটাতে চায়। ইদানিং সোশ্যাল সাইটগুলাতে কিছু লিখে তেমন শান্তি পাওয়া যায়না। এর কারনটা আজও ধরতে পারলাম না। হয়তো, মানুষ এখন আর সোশ্যাল মিডিয়াইা কিছু পড়বো বলে আর আসে না।

‘১০-‘১২ সালের কথা খুব মনে পড়ে যায় যখন আমরা Opera Mini এবং 2G ইন্টারনেট কানকেশন দিয়ে ইন্টারনেটে আসতাম সব উঠতি লেখকের লেখা কবিতা আর গল্প পড়তে। সেই সময় খুব রম্য লেখার কাল ছিল। আমিও এক-আধটা লিখেছি তখন। ভাবতেই হাসি পাই এখন। কি সব গুলু-গুলু করে লেখা গল্প-কবিতা। সময়টা আসলেই অন্যরকম ছিল। এখনকার জেনারেশনের ছেলেপুলেরা সে আর ক্যামনে বুঝবে!

এইটা লিখতেই নিজেকে আজ বড্ড বৃদ্ধ মনে হলো, কে জানে - হয়তো হয়েই গেছি। তাই, এখন কিছু লিখে যেতে চায়। নিজের জন্যে…